বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

‘উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট’ নিয়ে দেওয়া নাহিদের বক্তব্যে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ২২ প্রদর্শন করেছেন

‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবতেছে’—সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

তার এ বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে।

বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে নাহিদ ইসলামের ওই বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এসব পোস্টে পক্ষে–বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।  শনিবার সন্ধ্যায় একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ–সংক্রান্ত যে ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে, সেখানে রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ হাজার ব্যবহারকারী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আর ১ হাজার ৪০০টি মন্তব্য করা হয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন সে সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি উপদেষ্টা হয়েছিলেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছিলেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন নাহিদ। অবশ্য ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা রয়েছেন।

টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তারা কেউ সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাননি। তারা জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেটা হলে ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হতো না। রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারকে উৎখাত করা বা প্রতিবিপ্লব করার নানা ধরনের চেষ্টা চলমান ছিল। এটা এখনো মাঝেমধ্যে আছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যারা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের অবশ্যই ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলকে আমরা যে বিশ্বাসটা করেছিলাম, যে আস্থা রেখেছিলাম, সেই জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিট্রে (প্রতারণা) করেছে। যখন সময় আসবে, তখন আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।’

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরও বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। কিন্তু তারা যদি এটা বিশ্বাস করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ–অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তারা যদি তাদের ওপর ভরসা করত, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ