বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) ১৫ প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার দুপুরে সাংবিধানিক সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে এসব প্রস্তাব দেন দলটির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন ও যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া।
বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শুরুই হয়েছিল বিসিএসে বৈষম্য রোধের জন্য। কিন্তু এখনো পিএসসির মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সংস্কারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের প্রাধান্য তালিকায় চাকরিপ্রার্থীরা নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বত্র গুন্ডামি। মন্ত্রণালয়ে যারা রয়েছেন তারা এখনকার সময়ে দাঁড়িয়েও যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। যার ফলস্বরূপ এই প্রজন্মের ক্রোধ দেখতে হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভাগ ভাটোয়ারা আর পোস্টিং নিয়ে ব্যস্ত উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পরে আমলারাই সবচেয়ে সুবিধা নিয়েছে, আগে নিজেদের প্রমোশন নিশ্চিত করেছে।’
এনসিপির ১৫ দফা প্রস্তাবনা হলো-
১. ২৩ নন-ক্যাডার বিধি সংশোধন : প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে রয়েছে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য পিএসসি থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর যেন চিঠি ইস্যু করা হয়। ৪৩ বিসিএস থেকেই যেন সমন্বয় করা হয়।
২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক পিএসসিতে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের জন্য অধিযাচিত পদসমূহে দ্রুততম সময়ে সুপারিশ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
৩. ৪৪তম বিসিএসে অধিযাচিত ৮৭০ পোস্ট বৃদ্ধিসহ চলমান সপ্তাহেই ৪৪ এর পুনফলাফল দেয়া। সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে এই বিসিএস চলমান থাকায় চলতি বছরেই যেন গেজেট প্রকাশিত হয়।
৪. ২০২৩ এর নন-ক্যাডার বিধির সংশোধন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে চলমান (৪৩, ৪৪,৪৫,৪৬ ও ৪৭তম) সকল বিসিএস থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক নন-ক্যাডার পদে সুপারিশের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
৫. ৪৩তম বিসিএস নন ক্যাডার, যারা পূর্বে ১২ গ্রেডের হেড টিচার হিসেবে সুপারিশ পেয়েছে, তাদের যেন মেধার ভিত্তিতে নতুন সার্কুলারে যুক্ত করা হয়।
অন্যান্য দফা হলো-
৬. ৪৫তম বিসিএস ভাইভার হাজিরা পত্রে ভাইভা মার্কস ১০০ নম্বর লেখা এটার আপডেট।
৭. স্বচ্ছতা রক্ষার্থে প্রিলি, লিখিত ও ভাইভার মার্কস প্রকাশ করা।
৮. চূড়ান্ত নম্বনপত্র ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন ও রোল নম্বর দিয়ে দেখার সুযোগ করে দেয়া।
৯. পুলিশ ভ্যারিফিকেশন জটিলতা হ্রাস। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া এক মাসের মধ্যে সম্পন্নকরণ।
১০. ক্যালেন্ডার ইয়ারে প্রতিটি বিসিএস শেষ করা।
১১. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে স্পেশাল বিসিএসগুলোতে প্যানেল সিস্টেম রাখা।
১২. ভাইভা বোর্ডভিত্তিক মার্কসের তারতম্য হ্রাসে কয়েকটা নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি করা (ভাষা, দক্ষতা, পঠিত বিষয়, ক্যাডার চয়েজ, সমসাময়িক ইস্যু, রাষ্ট্রীয় পলিসি, প্রার্থীর বাহ্যিক ও মানসিক যোগ্যতা ইত্যাদি)।
১৩. প্রিলি থেকে লিখিত পরীক্ষার মধ্যবর্তী যৌক্তিক সময়সীমা অন্তত দুই মাস বা ৫০ দিন পূর্বে লিখিত রুটিন প্রকাশ।
১৪. চূড়ান্ত রেজাল্ট দেয়ার আগে ক্রস চেক করা যাতে সম ক্যাডার বা নিচের ক্যাডার কেউ না পায়। যেটা পূর্বের কমিশন করত।
১৫. পিএসসির অধীনে হওয়া পরীক্ষাগুলো গ্রেডভিত্তিক (Cluster/ সমন্বিত) নেওয়া।