সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

শিবচরের ভাগ্য পরিবর্তনে লড়তে প্রস্তুত ত্যাগী ছাত্রনেতা বাসার সিদ্দিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৫৪৯ প্রদর্শন করেছেন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দলের পরীক্ষিত নেতা বাসার সিদ্দিকীর নাম জোরালোভাবে উঠে এসেছে। দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের রোষানলে থাকা এই নেতা, তাঁর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনের চরম ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এলাকার জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত।

দীর্ঘ দেড় দশকে বাসার সিদ্দিকী বিএনপির জন্য এক আপসহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাঁকে বহন করতে হয়েছে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদী সরকারের চাপিয়ে দেওয়া ৪৭টি মিথ্যা মামলার বোঝা। এই মামলাগুলো তাঁর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছিলো—এমনকি বাবার মৃত্যুর পর তাঁর কবরে মাটি দেওয়ার সুযোগটুকুও তিনি পাননি। তাঁর এই আত্মত্যাগ তাকে ‘ওয়ান ইলেভেন’-এর একজন পরিক্ষীত সৈনিক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর ভূমিকা সবসময় ছিল প্রশ্নাতীত। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে বেগম জিয়াকে উচ্ছেদ করার প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি রাজপথ থেকে গ্রেফতার হন। আওয়ামী শাসনামলের শুরুতেই প্রথম হরতালে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় তিনি আহত হন এবং গ্রেফতার বরণ করেন।

রাজনৈতিক জীবনে আঘাত, আক্রমণ ও কারাবরণ যেন তাঁর নিত্যসঙ্গী। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অবৈধ ও একতরফা নির্বাচন প্রতিরোধের মিছিলে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং পুনরায় গ্রেফতার হন। ২০১৫ সালের ৯৩ দিনের লাগাতার আন্দোলনে তিনি একাধিকবার রাজপথে আহত হন। ২০১৬ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাওয়ার পথে দোয়েল চত্বরের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার বহরের উপর ছাত্রলীগের হামলায় তিনি আবারও গুরুতর আহত হন।

২০১৭ সালে বেগম জিয়ার কথিত ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’ হাজিরার সময় হাইকোর্টের সামনে পুলিশের নির্মম হামলায় তাঁর পা ভেঙে যায়। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, যেদিন বেগম জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়, সেদিন তিনি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিশাল মিছিলে নেতৃত্ব দেন।

তবে শুধু রাজপথেই নয়, ছাত্র রাজনীতিতেও তাঁর ভূমিকা ছিল ঐতিহাসিক। ২০১৯ সালের মার্চে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ ১০ বছর পর ছাত্রদল যখন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে, তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ঢাবি ছাত্রদলকে নেতৃত্ব দেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও তিনি হার মানেননি। ২০২৩ সালের ২৯ শে জুলাই ঢাকা অবরোধ কর্মসূচীতে ঢাকার প্রবেশপথ মাতুয়াইলে পুলিশের হামলায় তিনি আহত হন। সবশেষ গত ২৮ অক্টোবর রাজপথে আওয়ামী প্রশাসনের সাথে লড়াই করার পরদিনই যুবদলের মিছিল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

বাসার সিদ্দিকী বলছেন, শিবচরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে তিনি বদ্ধপরিকর। তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার হলো এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। তাঁর এই দীর্ঘ এবং কঠিন রাজনৈতিক পথচলা তাঁকে মাদারীপুর-১ আসনের জনগণের কাছে এক বিশ্বস্ত ও আত্মত্যাগী নেতা হিসেবে তুলে ধরেছে।

অপেক্ষা এখন দলীয় সিদ্ধান্তের। তবে এই নেতার প্রতি স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের যে সমর্থন, তা এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে তিনি একটি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ