শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

দুই দশকের অপেক্ষার অবসান হামজাদের

স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময়ঃ মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১২ প্রদর্শন করেছেন

সেই ২০০৩। ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকার মাঠে মোনেম মুন্নার গোল্ডেন গোলটি এখনো দর্শকদের চোখে ভাসে। কিন্তু এরপর দীর্ঘ ২২ বছর। হতাশা আর আক্ষেপই ছিল লাল সবুজদের সঙ্গী। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো।

আজ মঙ্গলবার ভারতকে হারিয়ে দীর্ঘ দুই দশকের হতাশা আর আক্ষেপ ঘুচালেন হামজা চৌধুরী, শেখ মোরসালিনরা। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সি- গ্রুপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। বিজয়ী দলের হয়ে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন। এই জয় টুর্নামেন্টে তেমন প্রভাব না ফেললেও আত্মতৃপ্তি নিয়ে ঘরে ফিরেছেন ফুটবলার, কর্মকর্তা এবং দর্শকরাও।

দেশের ফুটবল যেন আমুল বদলে দিয়েছেন হামজা চৌধুরী। মাঠ জুড়ে খেলছেন। নিজে গোল করছেন। অন্যকে দিয়ে গোলও করাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, গোল হজমের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েও দিচ্ছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা প্রবাসী এই ফুটবলার। নেপাল ম্যাচে একই দুই গোল করেছিলেন। ভারতের বিপক্ষে গোল না পেলেও সুযোগ পেয়েছিলেন। এমনকি গোলের হাত থেকে দেশকে বাঁচিয়েও দেন হামজা।

ভারতের বিপক্ষে নতুন করে সাজানো একাদশ নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। চোটমুক্ত হয়ে দলে ফেরেন শেখ মোরসালিন, আর প্রথম একাদশে জায়গা পান কানাডা প্রবাসী মিডফিল্ডার শমিত সোম। তবে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার জামাল ভূঁইয়া এবং সোহেল রানার (জুনিয়র) জায়গা হয়নি ম্যাচের একাদশে। অধিনায়কত্ব করেন সিনিয়র সোহেল রানা। গোলপোস্টে যাকে নিয়ে নেপাল ম্যাচের পর থেকে চলছিল সমালোচনা, সেই মিতুল মারমার ওপরই আস্থা রাখেন কোচ।

ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচকে কেন্দ্র করে ফুটবল-ভক্তদের মাঝে আগে থেকেই ছিল উন্মাদনা।  তারই ধারাবাহিকতায় ঘণ্টা তিনেক আগে থেকেই গ্যালারিতে দর্শকেরা হাজির হতে থাকেন। কিন্তু খেলা শুরুর পরও কিছু অংশ এখনও ফাঁকা। লাল-সবুজের জোয়ারে স্টেডিয়াম ছিল রীতিমতো উৎসবের মাঠ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম তীব্র ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আরেকটি অধ্যায় দেখা গেছে। ভারতীয় দলের উদ্দেশ্যে স্বাগতিক দর্শকরা ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ স্লোগান দেন।

দর্শকদের উত্তেজনা ও উন্মাদনা আরও জোর পায় মোরসালিনের গোলে। ম্যাচের ১২ মিনিটে রাকিবকে বল বাড়িয়ে এগিয়ে যান তরুণ এই ফরোয়ার্ড। বক্সে ফিরতি বল পেয়ে আলতো টোকায় জালে জড়ান মোরসালিন (১-০)। বাধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। ভারতীয় গোলকিপার দ্বিধা নিয়ে এগিয়ে যান ঠিকই, তবে তা গোল বাঁচাতে যথেষ্ট ছিল না তা। লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে আরও সুযোগ মিলেছিল লাল সবুজ শিবিরে, কিন্তু ব্যবধান দ্বিগুন করতে পারেননি হামজারা।

প্রতিপক্ষের একটি নিশ্চিত গোলও হেড করে বাঁচিয়ে দেন হামজা। গোলকিপার মিতুল মারমাও ছিলেন তেকাঠির নিচে অতন্দ্র প্রহরীর মতো। শেষ পাঁচ মিনিটতো দর্শকরা নিরবেই খেলা দেখেছেন। তবে কোন অঘটন ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েই মাঠ ছেড়েছেন হামজা চৌধুরী, তারিক কাজী, জায়ান আহমেদ, শমিত সোমরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ