সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ অপরাহ্ন

আইনগত জটিলতা এড়াতে আয়কর রিটার্ন জমা বাদ্যতামূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময়ঃ বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৫৮ প্রদর্শন করেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩০ নভেম্বরের, ২০২৩ এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক । ৩০ নভেম্বর ২০২৩- এর আগেই ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিয়ে দিন নিজ হাতে।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে আইনগত নানাবিধ এর জটিলতা তৈরি হতে পারে।

১। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে জরিমানা ও সরল সুদ ধার্য হবে

২। এছাড়াও বিনিয়োগের রেয়াত কম পাবেন, যা আপনার করদায় অনেক বাড়িয়ে দিবে।

৩। আপনি চাকুরীজীবি হলে এবং আপনার আয় করযোগ্য হলে,আপনাকে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হব। আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে আপনার প্রতিষ্ঠান আপনার বেতন বন্ধ করে দিতে পারে। কারন আপনি আয়কর রিটার্ন দাখিল না করলে এর দায় আপনার প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তায়। এছাড়াও আরও নানাবিধ আইনগত জটিলতা তৈরি হতে পারে।

৪। আপনি প্রতিষ্ঠানের মালিক হলে, আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঠিকমতো আয়কর রিটার্ন যথাসময়ে দাখিল করেছে।

৫। এছাড়াও ৩৮ ধরনের সেবা পেতে হলে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যেমন ব্যাংকঋণ পাওয়া, সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট ব্যবহার, অনলাইনে বেচাকেনার ব্যবসা, রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরগাড়ি দেওয়া এমনকি সন্তানকে ইংরেজি সংস্করণে (ইংলিশ ভার্সন) পড়াশোনা করালেও রিটার্ন জমা দিতে হবে। তাই ভবিষ্যতে এসব সেবা পেতে এবার রিটার্ন দিতেই হবে।

আয়কর বর্ষ ২০২৩-২০২৪ এ আয়কর রিটার্ন জমা দিতে আপনার যা যা প্রয়োজন –

ব্যক্তিগত তথ্য :
1. ইটিন সার্টিফিকেট ফটোকপি
2. জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
3. পাসপোর্ট সাইজ ফটো এক কপি।

চাকুরির তথ্য :
1. বেতন বিবরনী (অফিস কর্তৃক) (০১/০৭/২০২২ থেকে ৩০/০৬/২০২৩)
2. ব্যাংক বিবরনী (০১/০৭/২০২২ থেকে ৩০/০৬/২০২৩)
3. উৎসে কর কর্তন সার্টিফিকেট
4. প্রভিডেন্ট ফান্ড সার্টিফিকেট (যদি থাকে)

গৃহ সম্পত্তি হতে আয় থাকলে:
1. বাড়ী ভাড়ার প্রাপ্ত রশিদ
2. বাড়ী ভাড়ার চুক্তিপত্র
3. বাড়ী ভাড়ার ব্যাংকে নিয়ে থাকলে ব্যাংক বিবরনী
4. হোল্ডিং ট্যাক্স ও ভূমি কর / খাজনা

ব্যবসায়ের তথ্য:
1. ট্রেড লাইসেন্স
2. বার্ষিক ক্রয়-বিক্রয় ও আয় বিবরনী
3. সম্পদ ও দ্বায় বিবরনী
4. ব্যাংক বিবরনী (০১/০৭/২০২২থেকে ৩০/০৬/২০২৩)

বিনিয়োগের তথ্য:
1. ডিপিএস (যদি থাকে)
2. ইন্সুরেন্স সার্টিফিকেট (যদি থাকে).
3. শেয়ার মার্কেট বিনিয়োগ (যদি থাকে)
4. সঞ্চয় পত্র – (যদি থাকে)

সম্পদ ও দায় বিবরনীঃ
1. হাউজ, এপার্টমেন্ট (যদি নিজ নামে থাকে)
2. জমি, গাড়ী, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিকসস ইত্যাদি। (যদি নিজের নামে থাকে)
3. ব্যাংক ঋনের তথ্য (যদি নিজ নামে হয়)
4. অন্যান্য ঋনের তথ্য (যদি নিজ নামে হয়)।

এবং যারা রেগুলার রিটার্ন দেন তাদের বিগত বছরের রিটার্ন জমার কপি।

আয়কর রিটার্ন যাঁদের দিতেই হবেঃ

আয়কর কর্তৃপক্ষের কাছে করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করার মাধ্যম হচ্ছে আয়কর রিটার্ন । আয়কর আইন অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্ধারিত ফরমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। কারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন:
ক. যাঁদের করযোগ্য আয় রয়েছে, যেমন কোনো ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে ৩.৫ লাখ টাকার বেশি হয়; মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বেশি হয় এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি হয়।
খ. যাঁদের অবশ্যই রিটার্ন দাখিল করতে হবে:
১. যাঁর ১২ ডিজিটের টিআইএন আছে;
২. করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করলে;
৩. আয় বছরের পূর্ববর্তী তিন বছরের যেকোনো বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকলে;
৪. করদাতা যদি কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডারের এমপ্লয়ি বা কর্মচারী হন;
৫. করদাতা যদি কোনো ফার্মের অংশীদার হন;
৬. করদাতা যদি সরকার অথবা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটে বা প্রচলিত কোনো আইন, আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের কর্মচারী হয়ে আয় বছরের যেকোনো সময় ১৬ হাজার টাকা বা এর বেশি মূল বেতন পান;
৭. করদাতা যদি কোনো ব্যবসায় বা পেশায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদে বেতনভোগী কর্মী হন;
৮. করদাতার আয়কর অব্যাহতি পাওয়া বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য হয়ে থাকে;
৯. করদাতা যদি মোটর গাড়ির মালিক হন (মোটর গাড়ি বলতে জিপ বা মাইক্রোবাসকেও বোঝাবে);
১০. করদাতা যদি কোনো সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ হতে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোনো ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা করেন
১১. করদাতার যদি মূল্য সংযোজন কর আইনের অধীন নিবন্ধিত কোনো ক্লাবের সদস্যপদ থাকে
১২. করদাতা যদি চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসেবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার নিবন্ধিত হন;
১৩. করদাতা যদি আয়কর পেশাজীবী হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবন্ধিত হন;
১৪. করদাতা যদি কোনো বণিক বা শিল্পবিষয়ক চেম্বার বা ব্যবসায়িক সংঘ বা সংস্থার সদস্য হন;
১৫. করদাতা যদি কোনো পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের কোনো পদে বা সাংসদ পদে প্রার্থী হন;
১৬. করদাতা যদি কোনো সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কোনো স্থানীয় সরকারের কোনো টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেন;
১৭. করদাতা যদি কোনো কোম্পানির বা কোনো গ্রুপ অব কোম্পানিজের পরিচালনা পর্ষদে থাকেন;
১৮. করদাতা যদি মোটরযান, স্পেস বা স্থান, বাসস্থান অথবা অন্যান্য সম্পদ সরবরাহের মাধ্যমে শেয়ারড ইকোনমিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন; এবং
১৯. করদাতা যদি লাইসেন্সধারী অস্ত্রের মালিক হন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও সংবাদ